গোড়ালি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ জোড়া, যা প্রতিনিয়ত দাঁড়াতে, হাঁটতে, দৌড়াতে এবং উঠা-নামা করতে ব্যবহার হয়। এসব কাজের জন্যই গোড়ালি মচকানো বা ইন...

গোড়ালি মচকালে করণীয়!

6:32:00 PM Mainuddin 0 Comments

গোড়ালি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ জোড়া, যা প্রতিনিয়ত দাঁড়াতে, হাঁটতে, দৌড়াতে এবং উঠা-নামা করতে ব্যবহার হয়। এসব কাজের জন্যই গোড়ালি মচকানো বা ইনজুরিতে আক্রান্ত হতে পারে। এ কাজ ছাড়াও গর্তে পড়ে গেলে, রিকশা বা বাস থেকে নামতে গিয়ে, সিঁড়িতে এক স্টেপ ভুল করলে, খেলাধুলার সময়, ডিফেক্টিভ জুতা পরিধান করলে, এমনকি বিছানা থেকে উঠতে গিয়েও গোড়ালি মচকাতে পারে। ইনজুরির তীব্রতার তারতম্যে গোড়ালির লিগামেন্ট বিস্তৃত হতে পারে এবং আংশিক বা সম্পূর্ণ ছিঁড়ে যেতে পারে। মচকানো আঘাত কিছু দিন পর ভালো হয়ে যায়। একে তৎক্ষণাত বা একিউট মচকানো বলে। যখন মচকানো ইনজুরি দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রোগীকে আক্রান্ত করে রাখে তখন একে ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি মচকানো বলে। মচকানোর ফলে জোড়ায় ব্যথা হয় এবং জোড়া ফুলে যায়। ফুলা ও ব্যথার জন্য জোড়া নাড়াচাড়া করা যায় না। পায়ে ভর দিলে ব্যথা বেড়ে যায়।


করণীয়
গোড়ালিকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে।
২ থেকে ৩ দিন পায়ে ভর না দিয়ে ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটতে হবে।
বরফের টুকরা টাওয়ালে বা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি প্লাস্টিকের ব্যাগে নিয়ে লাগালে ব্যথা ও ফুলা কমে আসবে। প্রতি ঘণ্টায় ১০ মিনিট বা দু’ঘণ্টা পর পর ২০ মিনিট অনবরত লাগাতে হবে। তবে এটা সহ্যের মধ্যে রাখতে হবে। এ পদ্ধতি আঘাতের ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে।
স্পি­ন্ট ব্যবহার করে পা উঁচু করে রাখলে ফুলা কম হবে।
ইলাসটো কমপ্রেশন (ইলাসটিক সাপোর্ট বা অ্যাংলেট) ব্যবহারে ফুলা ও ব্যথা কম হবে।
এনালজেসিক বা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে।
আঘাতের ৪৮ ঘণ্টা পর কুসুম গরম পানির সেঁক/ঠাণ্ডা সেঁকে ব্যথা কম হবে।
গোড়ালির স্বাভাবিক নাড়াচাড়া ও পেশি শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।
অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি ইনজুরির ক্ষেত্রে ফিজিকেল থেরাপি এসডব্লিউডি, ইউএসটি প্রয়োজন হতে পারে।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
অসহ্য ব্যথা বা ব্যথা কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে।
আঘাতপ্রাপ্ত গোড়ালি কিছুতেই নাড়াতে
না পারলে
ফুলা ছাড়াও গোড়ালি বা পা অস্বাভাবিক
আকৃতি হলে।
খুঁড়িয়ে চার কদমের বেশি হাঁটা না গেলে।
গোড়ালির হাড়ে চাপ দিলে প্রচণ্ড ব্যথা
অনুভূত হলে।
পা ও আঙুলে অবশ ভাব লাগলে।
গোড়ালির পেছনে ব্যথা হলে এবং ফুলে গেলে।
পায়ের আঙুল নিচু করতে অসুবিধা হলে।
পায়ের পেশিতে ব্যথা হলে বা ফুলে গেলে।
চামড়া লাল হয়ে দ্রুত বিস্তৃত হলে।
ইনজুরির তীব্রতা বুঝতে না পারলে বা করণীয় না জানলে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে উপস্থিত হলে বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে চিকিৎসার শুরুতেই ইনজুরির কারণ জানতে হবে এবং সহ্যের মধ্যে রেখে গোড়ালি পরীক্ষা করে রোগের তীব্রতা নির্ণয় করতে হবে। গোড়ালি এক্স-রে করে (প্রয়োজনে সিটি স্ক্যান ও এমআরআই) অন্যান্য ইনজুরি যেমন, ফ্র্যাকচার ও জোড়ার ডিসেপ্লেসমেন্ট নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

0 comments: