তারাবী হ নামাজের হুকুমঃ রমজান মাসের এশার নামাজের পর ২০ রাকায়াত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ নামাজকে তারাবীহ নামাজ বলা হয়। তারাবী শব্দটি আরবী । তারা...

তারাবীহ নামাজের বিস্তারিত নিয়ম

2:12:00 PM Mainuddin 0 Comments


তারাবী হ নামাজের হুকুমঃ রমজান মাসের এশার নামাজের পর ২০ রাকায়াত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ নামাজকে তারাবীহ নামাজ বলা হয়। তারাবী শব্দটি আরবী । তারাবীহাহ্ তার বহুবচন, যার অর্থ ক্ষনিক বিশ্রাম। রমজানের এই নামাজে প্রতি ৪ রাকায়াতের পরে কিছু সময় অর্থাৎ ৪ রাকায়াত নামাজের সম পরিমান সময় বিলম্ব ও বিশ্রামের নিয়ম থাকায় এ নামাজে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে ।


তারাবীহ নামাজের ফজিলতঃ
রাসূল (সাঃ) বলেন, "(হে আমার উম্মতগন), তোমরা জেনে রেখ আল্লাহ তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন এবং উহার রাত্রে তারাবীহের নামাজ সুন্নাত করেছেন। অতএব, যে ব্যক্তি খালেস নিয়তে ঈমানের সাথে কেবল সোয়াবের আশায় এ মাসে দিনের বেলায় রীতিমত রোজা রাখবে এবং রাত্রিতে রীতিমত তারাবীহের নামাজ পড়বে তার বিগত সব সগীরা গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হবে।" অতএব, এ পবিত্র মাসে অধিক নেকী সঞ্চ্য করে লওয়া উচিৎ। এ মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের ৭০টি ফরজের সমান নেকী পাওয়া যায়।

তারাবীহ নামাজের সময়ঃ
যে রাতে রমজানের চাঁদ দেখা যাবে সে রাত থেকে তারাবীহ নামাজ শুরু করতে হবে। ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা গেলে তারাবীহ বন্ধ করতে হবে। তারাবী নামাজের সময় এশার নামাজের পর থেকে শুরু হয় এবং ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত থাকে । যদি কী এশার নামাজের পূর্বে তারাবী পড়ে তাহলে তারাবী হবে না। (দুররুল মুখতার)

তারাবীহ নামাজের জামায়াতঃ
রাসুল (সাঃ) রমজানে তিন রাত ২৩, ২৫ এবং ২৭ শে রাত তারাবীহ নামাজ জামায়াতে পড়িয়েছিলেন। তারপর তিনি যখন সাহাবীদের মধ্যে বিরাট উৎসাহ উদ্দীপনা ও অনুরাগ দেখলেন তখন মসজিদে এলেন না। সাহাবাগন তখন তাঁ দরজায় আওয়াজ দিতে লাগলেন। তখন নবীজি বললেন, আল্লাহ তোমাদের উৎসাহ উদ্দীপনায় আরও বরকত দিন । আমি এ আশংকায় মসজিদে যাইনি যে, এ নামাজ তোমাদের উপর ফরজ হয়ে না যায় এবং সর্বদা তোমরা তা পালন করতে না পার। কারণ, নফল নামাজ ঘরে পড়াতে বেশী সওয়াব ও বরকতের জারণ হয় (বুখারী)।
এ হাদিস থেকে প্রমানিত হয় যে, রাসূল (সাঃ) ৩ রাত জামায়াতের পরে দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) রীতিমত জামায়াত কায়েম করেন এবং সাহাবায়ে কিরাম তা মেনে নেন। পরবর্তীকালে কোন খলিফাই এ সুন্নতের বিরোধিতা করেননি। এ জন্য আলেম সমাজ এ নামাজকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া বলেছেন।


তারাবীহ নামাজের নিয়াতঃ
আরবীতে উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকাতাই ছালাতিত তারাবীহ ইক্তাদাইতুল বিহাযাল ইমামি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলায় নিয়াতঃ কিবলামুখী হয়ে দু'রাকায়াত তারাবীর নামাজ এই ইমামের পিছনে আদায় করছি "আল্লাহু আকবার"।
একা একা পড়লে হাইলাইটেড অংশটুকু পড়তে হবে না






তারাবীহ নামাজের দোয়াঃ
আরবীতে উচ্চারণঃ সুবহানা যিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা যিল ইজ্জাতি, ওয়াল আজমাতে, ওয়াল হায়বাতি,ওয়াল কুদরাতি, ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়া জাবারুত। সুবহানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা, সুববুহুন ক্কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়ার রূহ ।

বাংলায়ঃ পবিত্রতে ঘোষণা করছি তাঁর, যিনি ইহজগত, ফেরেশতা জগতের প্রভু সেই আল্লাহর মহিমা বর্ণনা করছি যিনি মহিমাময় বিরাট, ভীতিপূর্ণ, শক্তিময়, গৌরবময় এবং বভত্তর। আমি সে প্রতিপালকের গুনগান করছি, যিনি চিরঞ্জীব, যিনি কখনও নিদ্রা যান না এবং যাঁর কখনও মৃত্যু ঘটে না। পুতঃপবিত্র তিনি। তিনি আমাদের পালনকর্তা, ফেরেশতাকুল এবং আত্মাসমূহের পালনকর্তা। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমরা আপনার কাছে বেহেশত চাচ্ছি এবং দোযখ থেকে মুক্তি চাচ্ছি ।


তারাবীহ নামাজের মুনাজাতঃ
আরবী উচ্চারনঃ আল্লাহুম্মা ইন্না নাসয়ালুকাল জান্নাতা ওয়া নাউযুবিকা মিনান্নারি ইয়া খালিকাল জান্নাতি ওয়ান্নারি, বিরাহমাতিকা ইয়া আজিজু, ইয়া গাফফারু, ইয়া কারিমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহিমু, ইয়া জাব্বারু, ইয়া খালীকু, ইয়া বার। আল্লাহুম্মা আযিরনা মিনান্নারি, ইয়া মুজিরু, ইয়া মুজিরু, ইয়া মুজিরু, বিরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমীন ।

বাংলায়ঃ হে আল্লাহ, আপনারই সমীপে জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং আপনারই কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাচ্ছি। হে জান্নাত এবং জাহান্নামের সৃষ্টিকর্তা ! আপনি নিজ কৃপায়, হে প্রাক্রমশালী, হে ক্ষমাশীল, হে মহান, হে দোষ গোপনকারী, হে দয়ালু, হে সৃষ্টিকর্তা পুন্যময়, হে আশ্রয় দাতা, হে আশ্রয় দাতা, হে আশ্রয় দাতা, নিজ কৃপায় হে আল্লাহ ! পরম দয়ালু করুণাময়, আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচান।
সুত্র: ইন্টারনেট

0 comments: