বীজগনিত এর উৎপত্তি ও ইতিহাস!
Algebra বীজগনিত :Algebra বা বীজগনিত হল বীজগনিতের সেই শাখা যা গঠন, সম্পর্ক এবং পরিমানের সাথে সম্পর্কিত।
Algebra শব্দটা এসেছে আরবি Al-Jabr (আল-জাবর) থেকে। মুসলমান গনিতবীদ মুহম্মদ ইবন মুসা আল খোয়ারিজমি কর্তৃক লিখিত বিষদ গ্রন্থ ‘আল-মুকাবিলা’ থেকেই শব্দটি এসেছে।
যদিও বিশেষজ্ঞগন আজো ‘আল-জাবর’ শব্দটির সঠিক অর্থটা জানেন না তবুও অনেকে ধারনা করেন শব্দাটর অর্থ হল – restoration (পুনরুদ্ধার), completion (শেষ, সমাপ্তি), reuniter (পুর্নমিলন) ইত্যাদি। Algebra শব্দাটর অর্থগত ইতিহাস এটি।
Algebra’র উৎপত্তি সর্বপ্রথম কোথায় হয়েছে তা নিয়েও যথেষ্ট মত বিরোধ রয়েছে, তবে অধিকাংশ গবেষকরা বিশ্বাস করেন পুরাতন ব্যবিলনীয় সভ্যতায় আজ থেকে চার হাজার বছর আগে এটির উদপত্তি হয় এবং এলোমেলোভাবে এটির ব্যবহার হতে থাকে।
তবে আধুনিক বীজগনিতের প্রকৃতঅর্থেই যিনি প্রতিষ্ঠাতা (খ্রিষ্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে) তার নাম ডায়োফান্টাস।
গনিতের উন্নতির জন্য যে সকল গনিতবিদের অসামান্য অবদান রয়েছে তা নিচে আলোচিত হলঃ
জন নেপিয়ার (1550-1617) ছিলেন একজন স্কটিশ ল্যান্ড ওনার। তিনি 1614 সালে লগারিদমের টেবিলগুলোকে কম্পাইল করেন। তার এ আবিস্কার গনিতের একটি সম্পূর্ন নতুন দিক উন্মোচিত করে।এটি দিয়েই গনিতের রেনেসা যুগের সমাপ্তি এবং আধুনিক গনিতের সূচনা হয়।
Chiu-Chang Suan-Shu on The Nine Chapter on The Mathematical Art যা লেখা হয়েছে খ্রিষ্ট্রপূর্ব 280 তে, যা ছিল চিনাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। যাতে ছিল ২৪০ টির মতো সমস্যা। এই গ্রন্থের ৪ নং অধ্যায়ে determinate এবং indeterminate simultaneous linear equation নিয়ে আলোচনা হয়েছে positive এবং negative numbers ব্যবহার করে।
এছাড়া sea-mirror of the circle measurements ছিল 170 টির মতো সমস্যা নিয়ে যা লিখেছিলেন Li-Zhi or Li-Ye (1192-1272 AD.)
Yang Hui (1261-1275) mgic squares নিয়েও কাজ করেছিলেন।
আরবীয় গনিতবীদ সৃষ্টি করেছিলেন Irrational numbers, বীজগনিতের উপাদান দিয়ে। মিশরীয় গনিতবীদ আবু কামিল সুজা ইবন আসলাম (850-930) সর্ব প্রথম (যার ধরন ছিল এর নাম square root, cube root, fourth root) এই irrational number এর বর্গঘটিত (quadratic) সমীকরনের সমাধান করেন। এবং একটা সমীকরনের মাধ্যমে এটিকে বিস্তৃত করেন। তিনি তিনটি non linear সমীকরনের সমাধানও বের করেন তিনটি অজানা চলকের মাধ্যমে।
Omar Khhayyam (1050-1123) ও Algebra র উপর একটা গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি quadratic equation এর সমাধানে পাটিগনিত ও জ্যামিতিক ব্যবহার করেছিলেন এই শর্তে যে এটার সমাধান তিনি পাটিগনিত ও জ্যামিতির মাধ্যমে করবেন। কিন্তু তিনি শুধু জ্যামিতিক সমাধান ত্রিঘাত সমীকরনের জন্য (cubic equation)। তিনি ভূলবশত বিশ্বাস করেছিলেন এটার পাটিগনিতীয় (arithmatic) সমাধান সম্ভব নয়। অধিকন্তু তার জ্ঞান বীজগনিতে ও জ্যামিতিতে সম্পর্ক স্থাপনে অনেক শক্তিশালী ছিল।
রেনে দেকার্তে (1596-1650) ফরাসী গনিতবীদ, 1619 সালের নভেম্বরে যখন তিনি দানিয়ুব নদীর তীরে ক্যাস্পিং করছিলেন, তখন তিনি চিন্তা করেন জ্যামিতিতে এলজেব্রা বা বীজগনিতের ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা গনিতে নতুন শাখা দেয়, যার নাম হলো ‘এনালাইটিকাল জিওমেট্রি’। তিনিই হলেন প্রথম গনিতবিদ যিনি অজানা সংখ্যাকে ‘এলফাবেট’ বর্ন দ্বারা প্রকাশ করেন এবং xx এর পরিবর্তে x² লেখার প্রচলন করেন। তাকে আধুনিক গনিতের অগ্রপথিক বলা হয়ে থাকে।
কার্ল ফ্রেড্রিক গাউস(1777-1855); যাকে আমরা গনিতবিদদের গনিতবীদ বলে জানি, যিনি কথা বলতে পারবার আগেই নাম্বার নিয়ে কাজ করতে পারতেন। উনিশশত ও বিংশ শতাব্দির প্রায় সকল গনিতের শুরুটা হয় গাউসের কাছ থেকে। তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে বহুদিন ধরে অসমাধানকৃত Algebra fundamental theory র সঠিক প্রমান করেন। তার আগে একটা নাম আছে, সেটি হলো গনিতের রাজপুত্র।
নিলস হেনরিক এবেল(1802-1829) , যিনি বীজগনিতের ‘Genarel Fifth Order Equation (জেনারেল ফিফথ অর্ডার ইকুয়েশন)’ সমাধান করেন, যা অন্য কারোর পক্ষে সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তিনি প্রমান করেন যে, জেনারেল ফিফথ অর্ডার ইকুয়েশন শুধু বীজগনিতের Operation দিয়ে সমাধান করা যাবে না।
জার্মান গনিতবীদ জর্জ ক্যান্টর(1802-1829) সেট আবিস্কার করেন যা গনিতের অনবদ্য অংশ।গনিত সহ আরো অনেক জায়গায় আমরা এটির ব্যবহার দেখতে পাই।
জর্জবুল (1815-1864) লজিক ষ্টাডীতে ‘সিম্বলিক এপ্রোচ’ নিয়ে আসেন। এর মাধ্যমে তিনি জটিল লজিকাল সমস্যাগুলোকে সেটের উপর নির্ভর করে সিম্বলিক আকারে প্রকাশ ও সমাধান করতে পারতেন। সেটের বেসিক অপারেশন ‘ইউনিয়ন’ ও ‘ইন্টারসেকশন’ বুলিয়ান এলজেব্রা হিসেবে খ্যাত। বর্তমানে সাউন্ড রিজোনিং এর ক্ষেত্রে বুলিয়ান এলজেব্রা বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
0 comments: