মুদ্রার আবিস্কার এর ইতিহাস
মানব সভ্যতার ইতিহাসের গোড়ার দিকে মানুষ যখন কৃষি কাজের সূত্রপাত ঘটায় তখন একে অপরের কাছে দ্রব্য বিনিময়ের চাহিদা অনুভব করে। কেননা একেক অঞ্চলে একেক ধরনের শস্য অধিক মাত্রায় উৎপাদিত হতো। যেমন কোন এক অঞ্চলে অধিক মাত্রায় ভুট্টা উৎপাদিত হতো। অন্য আরেক অঞ্চলে ধান অধিক মাত্রায় উৎপাদিত হতো। যার ফলে চাহিদার অতিরিক্ত ফসল অযথাই নষ্ট হয়ে যেত । তখন মানুষ চিন্তা করল আমাদের অতিরিক্ত ফসল যদি অন্য অঞ্চলে নিয়ে গিয়ে এর বিনিময়ে তাদের অতিরিক্ত ফসল নিয়ে আসি তাহলে আর অপচয় হয় না এবং দুই অঞ্চলের চাহিদাও সমান থাকে। আর এ ধরনের চিন্তার পর থেকেই চালু হয় দ্রব্য বিনিময় প্রথা। নির্দিষ্ট একটি বাজারে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কৃষক তাদের উৎপাদিত অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে আসত এবং সেখানে দ্রব্যের আদান প্রদান ঘটত।
বহুকাল ধরে এ প্রথা চলতে থাকে। কিন্তু এ প্রথায় সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও পরিলক্ষিত হতে থাকে। একপর্যায়ে মানুষ ভাবতে থাকে এমন কিছু কি আবিষ্কার যায়, যার সাহায্যে যখন তখন পণ্য গ্রহণ বা প্রদান করা যায়? মানুষের এ ভাবনা থেকেই তাদের চিন্তা শক্তিতে তখন চলে আসে মুদ্রার কথা। মুদ্রার আবিষ্কার হওয়ার পরই শুরু হয় ক্রয়-বিক্রয় প্রথা। শুরু হয় ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ।
ব্যবসা-বাণিজ্যের উৎপত্তি হওয়ার পরপরই বিভিন্ন দেশে মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়। অতীতে বিভিন্ন মাধ্যমে মুদ্রা প্রচলিত ছিল। তবে কাগজের টাকায় মুদ্রা চালু হয় প্রথম সং রাজার শাসনামলে পশ্চিম চীনের জিচুয়ান প্রদেশের হেংছুতে। তখন চীনের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন মাধ্যমের টাকার বিনিময় হতো। ১২০৬ থেকে ১৩৬৭ খ্রিস্টাব্দে চীনের য়ুন রাজার শাসনামলেও একই ধরনের মুদ্রার প্রচলন ছিল। কাগজের মুদ্রা থাকার ফলে তখনও কোন ধাতব মুদ্রা তৈরি হয়নি।
0 comments: