ঝাঁকি!!! রম্য
ক’দিন আগে চলে গেল জামের মৌসুম। জাম বলতে রাস্তার জ্যামের কথা কিন্তু বলা হচ্ছে না। অনেকেই জ্যামকে জাম বলে কিনা। তো যেহেতু ক’দিন আগে জামের মৌসুম গেছে, অতএব সবাই জাম খেয়েছে এটাই স্বাভাবিক। জাম যদি দু-চারটা খাওয়া হয় তাহলে কামড় দেয়ার আগে লবণ মিশিয়ে কামড় দিলেই খাওয়া হয়ে যায়। কিন্তু জাম যদি কেজি খানেক থাকে, আর এ জাম খাওয়ার জন্য যদি বহু সংখ্যক খাদক থেকে থাকে তাহলে আলাদাভাবে লবণ মেশানো একটু ঝামেলা হয়ে যায়। তখন এমন একটা পদ্ধতির দরকার হয়, যাতে সব জামে একবারে লবণ মরিচ লেগে যায়। আর তখনই দরকার হয় ঝাঁকুনির। এক বাটির মধ্যে জাম আর লবণ-মরিচ রেখে আরেক বাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয় একটা স্পেশাল ঝাঁকুনি।
কিছু কিছু জিনিস আছে, যেগুলো আমাদের প্রেস্টিজের চাকাকে সবসময়ই সচল রাখতে সহায়তা করে। প্রেমিকা কর্তৃক প্রেস্টিজের চাকা পাঙ্কচারের কথাই ধরা যাক। ডেটিংয়ে বের হলে তাকে কিছু না খাইয়ে তো আর বাড়ি ফেরা যায় না, তাই না? কিন্তু কোন নরমাল হোটেলে খাওয়াতে গেলেও যে কোন প্রেমিকের অবস্থা টাইট হয়ে যায়। আবার কিছু না খাইয়ে বাড়ি ফিরলে যে প্রেস্টিজের চাকা পাঙ্কচার হবে, সেই আভাস তো আগেই দিলাম। এ উভয় সংকটের মধ্যে সংকট উত্তরণের মাধ্যম হতে পারে কিছু চানাচুর কিংবা ঝালমুড়ি। এতে খালিমুখে বাড়িও ফেরা হল না, আবার টাকাও তেমন খরচ হল না। লক্ষ্য করবেন, চানাচুরওয়ালা যখন পেঁয়াজ-মরিচ নিয়ে চানাচুর মাখায় তখন কিন্তু মোটামুটি ভালোই ঝাঁকুনি দেয়।
টিভি দেখার সময় আপনি যে রিমোট কন্ট্রোলটি ব্যবহার করেন তা কিন্তু আপনার কথায় চলে না। চলে ব্যাটারির কথায়। ব্যাটারি নেই তো রিমোট কন্ট্রোল সাহেব কোন কাজও করবেন না। এই যে ব্যাটারি না থাকার ব্যাপারটা, এটা কিন্তু বিভিন্নভাবে হতে পারে। পুরনো ব্যাটারি নয়, বরং নতুন ব্যাটারিও যদি থাকে তবু রিমোট কন্ট্রোলটা কাজ নাও করতে পারে। বিশেষ করে যদি এর ভেতরের ব্যাটারিদ্বয় কোন কারণে নড়েটড়ে যায়। আপনার যদি সন্দেহ হয়, ভেতরের ব্যাটারি নড়ে গেছে তখনই কিন্তু একটা ঝাঁকুনি দিয়ে বসবেন। যদি ঝাঁকুনি নাও দেন, এক হাতে রিমোটটা নিয়ে এই রিমোট দিয়ে অন্য হাতে বাড়ি মারবেন। উদ্দেশ হল ভেতরের নড়ে যাওয়া ব্যাটারিগুলোকে ঝাঁকুনি মেরে পুনঃস্থাপিত করে নেয়া।
দিন যত যাচ্ছে, গান-বাজনার পরিবেশ ততই উন্নত হচ্ছে। আর বাদ্যযন্ত্র ছাড়া যে গান-বাজনা হয় না এটা সবাই কম-বেশি অবগত। বাদ্যযন্ত্র যে কয় প্রকারের আছে তা আপনি আর আমি কেন, স্বয়ং বাদ্যযন্ত্রওয়ালারাও জানে না। অবশ্য জানার কোন প্রয়োজন আছে বলেও আমরা মনে করি না। তো এই যে এত বাদ্যযন্ত্র, এর মধ্যে একটি বাদ্যযন্ত্রের নাম হল ঝনঝনি। শহরের গান-বাজনায় যদিও ঝনঝনিটা খুব বেশি ব্যবহƒত হয় না, তবে গ্রামের গান-বাজনায় বিস্তর ব্যবহƒত হয়। ঝনঝনিটা কীভাবে বাজানো হয় তা নিশ্চয়ই জানেন। হাতে নিয়ে লাগাতার ঝাঁকি মারতে হয়। যত ঝাঁকি ততই ঝনঝনানি। অতএব বুঝতেই পারছেন গান-বাজনার ক্ষেত্রেও ঝাঁকিয়ে নেয়ার ব্যাপারটি কত গুরুত্বপূর্ণ।
যে লোকটার সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা হল তার সঙ্গে তো বটেই, যার সঙ্গে অল্প বিরতি দিয়ে দেখা হয় তার সঙ্গেও আমরা হ্যান্ডশেক করতেই থাকি, করতেই থাকি। অর্থাৎ যতবার দেখা ততবার হ্যান্ডশেক। হ্যান্ডশেক করার অর্থ যদিও হাতে হাত মেলানো বা করমর্দন করা, তবু আমরা কিন্তু শুধু করমর্দন করেই ক্ষান্ত থাকি না। ধরে নিন, বন্ধুর সঙ্গে দেখা হল। আমরা এগিয়ে বলিÑ আরে দোস্ত, কেমন আছিস। তবে ততক্ষণে কিন্তু আমরা হাতে হাত ধরে ঝাঁকুনি শুরু করে দিয়েছি। এই যে হ্যান্ডশেক করার সময় একজন আরেকজনের হাত ধরে দীর্ঘক্ষণ ঝাঁকুনি, এটা সত্যিই অবাক হওয়ার মতো ঘটনা। কিন্তু জিনিসটা এত বেশি কমন, আমরা এখন আর অবাক হই না। এসব কথা বলে এটা বোঝাতে চাচ্ছি, আমরা হাত ঝাঁকিয়ে নিতেও ভুল করি না।
যেদিন যুগান্তরের সঙ্গে বিচ্ছু দেয়া হয় সেদিন আমাদের দায়িত্ব খানিকটা বেড়ে যায়। কী ধরনের দায়িত্ব, কোন কোন সেক্টরে দায়িত্বÑ এসব নিয়ে নিশ্চয়ই বড় রকমের ভাবনা ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন। আমরা আপনাকে এতটুকু অভয় দিতে পারি, বড় রকমের ভাবনা ভাবার মতো কোন ঘটনা এখানে ঘটেনি। যুগান্তরের সঙ্গে যেদিন বিচ্ছু দেয়া হয় সেদিন আপনার যে দায়িত্বটা বাড়ে তা হল ঝাঁকুনির দায়িত্ব। যেহেতু যুগান্তরের পাতার ভেতর বিচ্ছু দিয়ে দেয়া হয় তাই পাতার ভেতর থেকে বিচ্ছুটা বের করতে পত্রিকা ধরে একটা ঝাঁকুনি মারতে হয়। ঝাঁকুনি মারলেই কেবল ভেতর থেকে বিচ্ছুটা বের হয়ে আসে। ঝাঁকুনির মাহাÍ কোন পর্যায়ে চলে গেছে একবার চিন্তা-ভাবনা করে দেখুন দেখি।
কিছু কিছু জিনিস আছে, যেগুলো আমাদের প্রেস্টিজের চাকাকে সবসময়ই সচল রাখতে সহায়তা করে। প্রেমিকা কর্তৃক প্রেস্টিজের চাকা পাঙ্কচারের কথাই ধরা যাক। ডেটিংয়ে বের হলে তাকে কিছু না খাইয়ে তো আর বাড়ি ফেরা যায় না, তাই না? কিন্তু কোন নরমাল হোটেলে খাওয়াতে গেলেও যে কোন প্রেমিকের অবস্থা টাইট হয়ে যায়। আবার কিছু না খাইয়ে বাড়ি ফিরলে যে প্রেস্টিজের চাকা পাঙ্কচার হবে, সেই আভাস তো আগেই দিলাম। এ উভয় সংকটের মধ্যে সংকট উত্তরণের মাধ্যম হতে পারে কিছু চানাচুর কিংবা ঝালমুড়ি। এতে খালিমুখে বাড়িও ফেরা হল না, আবার টাকাও তেমন খরচ হল না। লক্ষ্য করবেন, চানাচুরওয়ালা যখন পেঁয়াজ-মরিচ নিয়ে চানাচুর মাখায় তখন কিন্তু মোটামুটি ভালোই ঝাঁকুনি দেয়।
টিভি দেখার সময় আপনি যে রিমোট কন্ট্রোলটি ব্যবহার করেন তা কিন্তু আপনার কথায় চলে না। চলে ব্যাটারির কথায়। ব্যাটারি নেই তো রিমোট কন্ট্রোল সাহেব কোন কাজও করবেন না। এই যে ব্যাটারি না থাকার ব্যাপারটা, এটা কিন্তু বিভিন্নভাবে হতে পারে। পুরনো ব্যাটারি নয়, বরং নতুন ব্যাটারিও যদি থাকে তবু রিমোট কন্ট্রোলটা কাজ নাও করতে পারে। বিশেষ করে যদি এর ভেতরের ব্যাটারিদ্বয় কোন কারণে নড়েটড়ে যায়। আপনার যদি সন্দেহ হয়, ভেতরের ব্যাটারি নড়ে গেছে তখনই কিন্তু একটা ঝাঁকুনি দিয়ে বসবেন। যদি ঝাঁকুনি নাও দেন, এক হাতে রিমোটটা নিয়ে এই রিমোট দিয়ে অন্য হাতে বাড়ি মারবেন। উদ্দেশ হল ভেতরের নড়ে যাওয়া ব্যাটারিগুলোকে ঝাঁকুনি মেরে পুনঃস্থাপিত করে নেয়া।
দিন যত যাচ্ছে, গান-বাজনার পরিবেশ ততই উন্নত হচ্ছে। আর বাদ্যযন্ত্র ছাড়া যে গান-বাজনা হয় না এটা সবাই কম-বেশি অবগত। বাদ্যযন্ত্র যে কয় প্রকারের আছে তা আপনি আর আমি কেন, স্বয়ং বাদ্যযন্ত্রওয়ালারাও জানে না। অবশ্য জানার কোন প্রয়োজন আছে বলেও আমরা মনে করি না। তো এই যে এত বাদ্যযন্ত্র, এর মধ্যে একটি বাদ্যযন্ত্রের নাম হল ঝনঝনি। শহরের গান-বাজনায় যদিও ঝনঝনিটা খুব বেশি ব্যবহƒত হয় না, তবে গ্রামের গান-বাজনায় বিস্তর ব্যবহƒত হয়। ঝনঝনিটা কীভাবে বাজানো হয় তা নিশ্চয়ই জানেন। হাতে নিয়ে লাগাতার ঝাঁকি মারতে হয়। যত ঝাঁকি ততই ঝনঝনানি। অতএব বুঝতেই পারছেন গান-বাজনার ক্ষেত্রেও ঝাঁকিয়ে নেয়ার ব্যাপারটি কত গুরুত্বপূর্ণ।
যে লোকটার সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা হল তার সঙ্গে তো বটেই, যার সঙ্গে অল্প বিরতি দিয়ে দেখা হয় তার সঙ্গেও আমরা হ্যান্ডশেক করতেই থাকি, করতেই থাকি। অর্থাৎ যতবার দেখা ততবার হ্যান্ডশেক। হ্যান্ডশেক করার অর্থ যদিও হাতে হাত মেলানো বা করমর্দন করা, তবু আমরা কিন্তু শুধু করমর্দন করেই ক্ষান্ত থাকি না। ধরে নিন, বন্ধুর সঙ্গে দেখা হল। আমরা এগিয়ে বলিÑ আরে দোস্ত, কেমন আছিস। তবে ততক্ষণে কিন্তু আমরা হাতে হাত ধরে ঝাঁকুনি শুরু করে দিয়েছি। এই যে হ্যান্ডশেক করার সময় একজন আরেকজনের হাত ধরে দীর্ঘক্ষণ ঝাঁকুনি, এটা সত্যিই অবাক হওয়ার মতো ঘটনা। কিন্তু জিনিসটা এত বেশি কমন, আমরা এখন আর অবাক হই না। এসব কথা বলে এটা বোঝাতে চাচ্ছি, আমরা হাত ঝাঁকিয়ে নিতেও ভুল করি না।
যেদিন যুগান্তরের সঙ্গে বিচ্ছু দেয়া হয় সেদিন আমাদের দায়িত্ব খানিকটা বেড়ে যায়। কী ধরনের দায়িত্ব, কোন কোন সেক্টরে দায়িত্বÑ এসব নিয়ে নিশ্চয়ই বড় রকমের ভাবনা ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন। আমরা আপনাকে এতটুকু অভয় দিতে পারি, বড় রকমের ভাবনা ভাবার মতো কোন ঘটনা এখানে ঘটেনি। যুগান্তরের সঙ্গে যেদিন বিচ্ছু দেয়া হয় সেদিন আপনার যে দায়িত্বটা বাড়ে তা হল ঝাঁকুনির দায়িত্ব। যেহেতু যুগান্তরের পাতার ভেতর বিচ্ছু দিয়ে দেয়া হয় তাই পাতার ভেতর থেকে বিচ্ছুটা বের করতে পত্রিকা ধরে একটা ঝাঁকুনি মারতে হয়। ঝাঁকুনি মারলেই কেবল ভেতর থেকে বিচ্ছুটা বের হয়ে আসে। ঝাঁকুনির মাহাÍ কোন পর্যায়ে চলে গেছে একবার চিন্তা-ভাবনা করে দেখুন দেখি।
0 comments: